হার্নিয়া - রোগ কেন হয় হার্নিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

হার্নিয়া একটি রোগ যা আমাদের শরীরে হয়ে থাকে। মানব শরীরে রোগের কোন অভাব নেই। আমাদের আজকের লেখা আর্টিকেল হল হার্নিয়া কেন হয়-হার্নিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার। হার্নিয়া কেন হয়-হার্নিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে। ভিজিট করুন আমাদের আজকের লেখা হার্নিয়া কেন হয়-হার্নিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার এই আর্টিকেলটি।
হার্নিয়া - রোগ কেন হয় হার্নিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার


সূচিপত্রঃ

  • হার্নিয়া কেন হয়-হার্নিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার
  • হার্নিয়া রোগ হলে কি কি সমস্যা হয়
  • পুরুষের হার্নিয়ার রোগ কেন হয়
  • মেয়েদের হার্নিয়া রোগ কেন হয়
  • হার্নিয়া কেন হয়-হার্নিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে শেষ কথা

হার্নিয়া কেন হয়-হার্নিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকারঃ 

হার্নিয়া হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে একটি অভ্যন্তরীণ অঙ্গ আপনার পেশীর একটি ক্ষীণ বিন্দু দ্বারা তৈরি একটি খোলার মাধ্যমে বাইরে ধাক্কা দেয়। হার্নিয়া হলো গহ্বরের দুর্বল প্রাচীর এর আসল স্থান থেকে টিস্যু বা পেশীর প্রসারন। সাধারণত হার্নিয়া গহ্বর থেকে উদ্ভূত একটি স্ফীতি হিসেবে প্রদর্শিত হয়। হার্নিয়া শরীরের অনেক জায়গায় হতে পারে। হার্নিয়া পরিলক্ষিত সবচেয়ে সাধারণ জায়গা হলো পেট এবং পেলভিক মেঝে,কুচকি,ওপরের উরু এবং নাভি।এ সকল জায়গায় হার্নিয়া আক্রান্ত বেশি হয়।
পেট এবং ইনগুইনাল হার্নিয়াস সবচেয়ে সাধারণ। পুরুষরা নারীদের তুলনায় ইনগুইনাল হার্নিয়াসে বেশি ভোগে। যেহেতু হার্নিয়া একটি রোগ।সেহেতু অবশ্যই এর চিকিৎসা ও প্রতিকারও রয়েছে।কোন রোগ কে   অবহেলা করতে নেই।কারণ কোনো রোগ আমাদের শরীরের জন্য ভালো কিছু নয়।তেমনি হার্নিয়া ও আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়।যদি কারো হার্নিয়া হয়ে যায় বা হার্নিয়াতে আক্রান্ত হয় তাহলে অবশ্যই এর চিকিৎসা করা উচিত। যদি কারো জন্মগত ভাবে হার্নিয়া থাকে তবে তা প্রতিরোধ করা যায় না। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে হার্নিয়া হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
  1. প্রতি দিন নিয়মিত ব্যায়াম করে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা এবং পরিমান মত খাবার গ্রহণ করা।
  2. খাবারের তালিকায় বেশি বেশি শাকসবজি ও টাটকা ফল রাখতে হবে।
  3. যে কোন ভারী জিনিষ উত্তোলন করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করা।
  4. তাড়াতাড়ি হাটা এবং দৌড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

হার্নিয়া রোগ হলে কি কি সমস্যা হয়ঃ

এমন কোন রোগ নেই,যে রোগ আমাদের শারীরিক কোন সমস্যা করে না।সব ধরনের রোগী আমাদের শরীরে সমস্যা করে।আসলে রোগ মানেই সমস্যা রোগ মানে কষ্ট। হার্নিয়া একটি জটিল রোগ।এই রোগের প্রধান উপসর্গ হলো ব্যথা।হার্নিয়া বড় হয়ে গেলে অস্ত্রোপচার করতে হয়।রোগীরা সহজে অস্ত্র প্রচারে যেতে চান না।ফলে এটি আর একসময় আরো বিশাল আকার ধারণ করে এবং সমস্যা বেশি সৃষ্টি হয়।
হার্নিয়া থাকলেই যে সবার উপসর্গ থাকবে এমনটা নয় অনেক সময় হার্নিয়ার কোন উপসর্গ দেখা দেয় না। তবে হার্নিয়ার প্রধান উপসর্গ হলো ব্যথা।এছাড়াও পেটে বা কুচকিতে ভারী ভাব অনুভব হতে পারে। হার্নিয়া রোগে আক্রান্ত হলে অনেক ধরনের সমস্যা হয় সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-
  1. পেটের নির্দিষ্ট অংশ ফুলে যায় এবং সেই ফুলে যাওয়া অংশ থেকে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হয়
  2. শরীর নিচু করলে ব্যথা অনুভব হয়
  3. খাওয়া-দাওয়া না করার পরও পেট ভরা ভরা অনুভূত হয়
  4. বমি বমি ভাব হয়
  5. নাভির আশপাশ ফুলে যায়
  6. কুচকি ও অন্ড থলি ফুলে যাওয়া
  7. উরুর গোড়ার ভেতর দিকে ফুলে যাওয়া
  8. পেটে পূর্বে কোন অপারেশন করা থাকলে সেই জায়গা ফুলে যাওয়া
  9. শরীরে জ্বর চলে আসা
  10. আক্রান্ত স্থানের আশেপাশের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া
  11. কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়
  12. অতিরিক্ত হাসি ও কাশি দেখা দেয়
উপরে উল্লেখিত রক্ষণগুলো আপনার শরীরে দেখা দিলে,বুঝতে হবে আপনি হার্নিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।হার্নিয়া রোগ অবশ্যই শরীরের জন্য একটি জটিল রোগ।কোন রোগীর শরীরের জন্য ভালো হয় না।হার্নিয়া রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুততম চিকিৎসকের নিকটে যাওয়া উচিত এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।

পুরুষের হার্নিয়া রোগ কেন হয়ঃ

আমাদের চারপাশে এমন অনেক ধরনের মানুষ রয়েছে।যারা কোন রোগের শুরুতে সেই রোগকে পাত্তা দেয় না এবং মনে করে এটা কিছুই নয়।এক সময় ঠিক হয়ে যাবে।এরকম ভুল ধারণার কারণে সে রোগটা তাদের শরীরে এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছায়।তখন অনেক বিপদের সম্মুখীন হতে হয়।তেমনি একটি রোগ হল হার্নিয়া।হার্নিয়া কেন হয়-হার্নিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার এবং পুরুষের হার্নিয়া রোগ কেন হয়।এ সকল তথ্য জানতে হলে আমাদের আজকের লেখা হার্নিয়া কেন হয়-হার্নিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার এই আর্টিকেলটি ভিজিট করুন। 
নারী পুরুষ উভয়েরই এই হার্নিয়া রোগটি হতে পারে।তবে নারী পুরুষ উভয়ের ভিন্ন ভিন্ন কারণে হার্নিয়া রোগ হয়ে থাকে।হার্নিয়া রোগ কেন হয় এ বিষয়ে বলতে গেলে বলা যায় যে, একটি বালতির মধ্যে ফুটো হয়ে গেলে।পানি বাইরে বেরিয়ে আসবে।হার্নিয়ার ক্ষেত্র ঠিক তেমনটাই হয়।পেটের পিছনের দিকে থাকে হাড়,সামনে রয়েছে পেশি তার ভেতরে থাকে অস্ত্র নালী, চর্বি ইত্যাদি কিন্তু পেটের মধ্যে কোথাও ফুটো হয়ে গেলে।এর ভেতরের পদার্থগুলো বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইবে।একেই হার্নিয়া বলে। ছেলেদের গোনাড অঙ্গে দুর্বলতা সৃষ্টি হলে গ্রোইন হার্নিয়া হতে পারে।স্থুলতার কারনে নাভিতে ও হার্নিয়া হতে পারে।

মেয়েদের হার্নিয়া রোগ কেন হয়ঃ

অনেকেই হয়তো মনে করে হার্নিয়ার রোগ শুধু ছেলেদেরই হয়।মেয়েদের হয় না।এই ধারণাটি একেবারেই ভুল ধারণা।হার্নিয়া এমন একটি রোগ।এই রোগ নারী পুরুষ উভয়েরই হতে পারে।তবে এই রোগ হলে ভয়ের কোন কারণ নেই।এমনকি কোন রোগেরই ভয়ের কোন কারণ নেই।কারণ সব রোগেরই চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।সঠিকভাবে চিকিৎসা নিলে এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে।সব রোগ থেকেই আমরা মুক্তি পেতে পারি।
তবে কোন রোগেই অবহেলা করতে নেই। শরীরের ভেতরের কোন অঙ্গ বা তার অংশবিশেষ পর্দা ভেদ করে বাইরে বের হয়ে আসে।তখন হার্নিয়া দেখা দেয়। দীর্ঘদিন কাশি হওয়া।মেদ ভুরি,সন্তান ধারণ ইত্যাদির কারণে হার্নিয়া দেখা যেতে পারে।পেটের উপরে,নাভির চারপাশে অনেক সময় হার্নিয়ার দেখা যায়। অস্ত্র প্রচারের পরও অনেক সময় হার্নিয়া দেখা যায়।মেয়েদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা বেশি হয়। হার্নিয়া রোগটা নারী বা পুরুষের জারি হোক না কেন,এ রোগের চিকিৎসা অতি দ্রুত করা উচিত।

হার্নিয়া কেন হয়-হার্নিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে শেষ কথাঃ

হার্নিয়া কেন হয়-হার্নিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে শেষ কথা হল,যে রোগটাই আমাদের শরীরে হোক না কেন।সে রোগের দ্রুত চিকিৎসা করা উচিত।হার্নিয়া এমন একটি রোগ। এই রোগটি একসময় আমাদের শরীরে থাকতে থাকতে অনেক বড় আকার ধারণ করে এবং তখন অস্ত্রপ্রচার করতে হয়।আবার অস্ত্রপ্রচার করার পরেও যে এই রোগটার নিরাময় ঘটে তেমনটা নয়। হার্নিয়া অপারেশন করার পরেও অনেক সময় আবার এই রোগটা দেখা যায়।কাজেই আমাদের যাতে হার্নিয়া রোগটা না হয়। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
যে সকল কারণে হার্নিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।সে সকল কাজ আমরা এড়িয়ে চলবো। সুস্থ সবল স্বাস্থ্য আমরা কে বা না চাই।তাই আমরা যদি সুস্থ থাকতে পারি।সেদিকে আমাদের নিজেদেরই খেয়াল রাখা উচিত।যে সকল কাজ করলে আমরা অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে সকল কাজ আমরা এড়িয়ে চলব।প্রত্যেকটা অসুখ আমাদের শরীরে হওয়ার কারণটা কিন্তু আমরা নিজেরাই।আমরা নিয়মিতভাবে চলাফেরা করি না।
এ কারণেই আমাদের শরীরের রোগের আগমন ঘটে। যেহেতু স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল।সে ক্ষেত্রে আমাদের শরীরের ভালো-মন্দ আমাদেরই খেয়াল রাখতে হবে। একটু সাবধানতার সাথে চললেই আমরা অনেক রোগের হাত থেকে বাঁচতে পারি কিন্তু আমরা সে সকল খেয়াল মাথায় রাখি না। একটা সময় আমরা স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা না করে অধিক পরিশ্রম করে অর্থ সঞ্চয় করি।
আবার সেই শরীর যখন অসুস্থ হয়ে যায় তখন আবার সেই উপার্জিত অর্থই শেষ করি চিকিৎসকের পিছনে। আমরা একটু সাবধানতার সাথে চললেই আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। নিয়মিত খাওয়া,নিয়মিত ঘুম এগুলো হলো শরীরের এনার্জি বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে রোগের হাত থেকে মুক্ত রাখে।এমন কোন খাবার আমাদের খাওয়া উচিত নয় বা এমন কোন নেশা আমাদের করা উচিত নয়। যেটা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।আমরা মানুষ আমাদের সব ধরনের জ্ঞান বুদ্ধি রয়েছে। কাজেই আমরা সুস্থ থাকার জন্য কি করতে হবে সেগুলো জানি।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)